মনোবিদ জানালেন নেতিবাচক চিন্তা থেকে মুক্তির ৭ উপায়

একটা মজার গবেষণায় চোখ আটকে গেল। একটা মানুষ যত নেতিবাচক চিন্তা করে স্ট্রেস বা মানসিক ধকলে পড়ে, তার ৯০ শতাংশ বাস্তবে কখনো ঘটেই না! অথচ এসব নেতিবাচক চিন্তা তাকে কুরে কুরে খায়। তার মানসিক চাপ কয়েক গুণ বাড়িয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের বারোটা বাজিয়ে দেয়। আটকা পড়ে নেতিবাচক চিন্তার দুষ্টচক্রে। নেতিবাচক চিন্তা থেকে কীভাবে নিজেকে বাঁচানো যায়, সে সম্পর্কে ভেরি ওয়েল মাইন্ড–এ পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর ক্ল্যারিটি ক্লিনিকের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ড. এমি ডারামুস। কী সেসব?
১. লিখে ফেলুন
সত্যিকার অর্থে কোন বিষয়টি নিয়ে আপনি চিন্তিত বা এ রকম পরিস্থিতিতে আপনার কী করণীয়, লিখে ফেলুন। যেকোনো বিষয় ধাপে ধাপে লিখে ফেললে, সেটি বোঝা বা বিশ্লেষণ করা অনেক সহজ হয়ে যায়। ড. এমি ডারামুস বলেন, ‘নিজের ট্রিগারগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন। চাপের মুখে আপনি কী ধরনের আচরণ করেন, সে সম্পর্কে জানুন। তাহলে আপনার চাপ সামাল দিতেও সুবিধা হবে।’
২. বিরতি নিন
যখনই মাথায় ঝাঁকে ঝাঁকে নেতিবাচক চিন্তা আসছে, সেই মুহূর্তে আপনি যে কাজটি করছেন, সেখান থেকে বিরতি নিন। কী করলে আপনি একটু ভালো বোধ করবেন, সেটি খুঁজে বের করুন। হয়তো ধীরে ধীরে এক গ্লাস পানি খেতে পারেন। এক কাপ চায়ে চুমুক দিতে পারেন। সবুজ প্রকৃতির দিকে তাকাতে পারেন। জানালা বা বারান্দা থেকে বাইরে বা রাস্তায় কী হচ্ছে, দেখতে পারেন। কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন। বাইরে থেকে একটু হেঁটে আসুন। ডিপ ব্রিদিং করতে পারেন। ব্যায়ামও করতে পারেন। গবেষণা বলছে, কাজের ফাঁকে ছোট বিরতি নিলে কাজে মনোযোগ আর কাজের মান—দুটিই বাড়ে।
৩. নেতিবাচক চিন্তার তালিকা করুন
সর্বোচ্চ কী কী খারাপ হতে পারে, সেসবের সম্ভাব্য তালিকা করুন। দেখবেন, ৫ থেকে ৬ নম্বর লিখতে লিখতেই আপনি সেসব ঘটার আশঙ্কা কাটিয়ে উঠে অনেকটা নির্ভার বোধ করছেন।
৪. নেতিবাচক চিন্তাকে চ্যালেঞ্জ করুন
সর্বোচ্চ খারাপ কী ঘটতে পারে, সেই দৃশ্যপট কল্পনা করুন। সেটি ঘটা কতটা যৌক্তিক বা বাস্তবসম্মত, তার সম্ভাবনা যাচাই করুন। এবার সেই পরিস্থিতিকে চ্যালেঞ্জ করুন। নিজেকে বলুন, এ রকম পরিস্থিতি যদি আসেও আপনি সেটার মোকাবিলা করবেন। দেখবেন, অনেকটাই হালকা লাগছে।
৫. নেতিবাচক চিন্তাকে ইতিবাচক চিন্তায় বদলে ফেলুন
আপনি হয়তো চিন্তা করেন, ‘যদি এ রকম খারাপ কিছু হয়...’। এর বদলে আপনি ইতিবাচক চিন্তা করুন। মনের ভেতর ‘যদি’ দিয়ে শুরু হওয়া কোনো বাক্য যেন নেতিবাচক না হয়, সেই চর্চা করুন। নিজেকে একটা আশাবাদী, ইতিবাচক মানুষে বদলে ফেলুন। থেরাপিস্টের সঙ্গেও আলাপ করতে পারেন।
৬. নিজের যত্ন নিন
নিজের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিন। সময় নিয়ে নিজের যত্ন নিন। আপনি যখন নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী, যখন একটা পরিস্থিতি বাস্তবসম্মতভাবে বিশ্লেষণ করতে সক্ষম, তখন খুব কমই অবাস্তব নেতিবাচক কল্পনা আপনার ঘুমকে স্পর্শ করতে পারবে।
৭. সৃজনশীল কাজে মন দিন
প্রতিদিন খানিকটা সৃজনশীল কাজ করুন। সেটা হতে পারে বাগান করা, রান্না করা, ছবি তোলা, ইউটিউবিং বা অন্য কিছু।
সূত্র: ভেরি ওয়েল মাইন্ড
