এতিমখানার অনুদানে ঘুষের অভিযোগ: সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তোলপাড়

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. শরীফুল ইসলামের বিরুদ্ধে বেসরকারি এতিমখানার অনুদানে জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে ঘুষ নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে জেলাজুড়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র জানায়, সদর উপজেলার অন্তত ২৭টি এতিমখানার ৬৭৭ জন এতিম শিশুর ক্যাপিটেশন গ্রান্ট বিতরণে এই ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সরকারি বরাদ্দের চেক দেওয়ার সময় মোটা অঙ্কের ঘুষ আদায়ের অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ আরও রয়েছে, ঘুষ গ্রহণ সংক্রান্ত অভিযোগ ধামাচাপা দিতে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের কাছ থেকে সিল ও স্বাক্ষর নিয়েছেন অফিসার শরীফুল।
ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠানের একাধিক প্রতিনিধি বলেন, “সরকারের এই অর্থ দুর্বল ও অনাথ শিশুদের জন্য। অথচ তা থেকেও ঘুষ নিতে হবে—এটা কেবল দুর্নীতি নয়, মানবিক অপরাধ।” তারা আরও বলেন, “এতিমদের টাকা আত্মসাৎকারীদের শুধু চাকরিচ্যুতি নয়, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”
সমাজসেবা অধিদফতরের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি নিবন্ধিত বেসরকারি এতিমখানায় ১০ জন এতিম শিশু থাকলে, তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশের জন্য ক্যাপিটেশন গ্রান্ট প্রদান করা হয়। বর্তমানে মাসিক মাথাপিছু বরাদ্দ ২ হাজার টাকা, যার মধ্যে খাদ্য বাবদ ১,৬০০, পোষাক ২০০ এবং চিকিৎসা ও অন্যান্য বাবদ ২০০ টাকা অন্তর্ভুক্ত।
এদিকে, শরীফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এর আগেও খুলনার কয়রা উপজেলায় দায়িত্ব পালনকালে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল এবং তদন্তও সম্পন্ন হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, “অনৈতিকভাবে কারও নিকট কোনো টাকা নেওয়া হয়নি।” তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উল্টো অভিযোগ তুলে বলছেন, “তিনি নিজের অপরাধই সতর্কতার ছলে ঢাকতে গিয়ে ফাঁস করে দিচ্ছেন।”