মুন্সীগঞ্জে গণপিটুনিতে সানা মাঝি নিহত, উদ্ধার একনলা শটগান ও কার্তুজ

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মধ্য মাকহাটি তালগাছতলা রোডে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে সানা মাঝি (৪২) নামের এক ব্যক্তির রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহের পাশ থেকে একটি একনলা শটগান ও দুই রাউন্ড কার্তুজও উদ্ধার করা হয়। নিহত সানা মাঝি ওই গ্রামেরই মৃত মোহাম্মদ মাঝির ছেলে। শুক্রবার সকাল ১০টায় একটি প্রেস রিলিজের মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে।
পুলিশ জানায়, স্থানীয়দের মসজিদের মাইকিংয়ের মাধ্যমে ডাকাত আটক করা হয়েছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে তালগাছতলা এলাকায় গিয়ে তারা রক্তাক্ত অবস্থায় সানা মাঝির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। তার শরীরের পাশেই পড়ে ছিল একটি শটগান ও দুটি কার্তুজ। প্রেস রিলিজে বলা হয় স্থানীয়রা সন্দেহভাজন হিসেবে সানাকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে এবং পরে তার মরদেহ রাস্তায় ফেলে রাখে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, এবং এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে ঘটনার ভিন্ন চিত্র উঠে এসেছে। নিহতের ভাই হাবু মাঝি অভিযোগ করেছেন, “এটি ডাকাতি নয়, পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সানাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং এরপরই তার লাশ পাওয়া যায়।
পরিবার জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকে সানা মাঝি তার পরিবারসহ নিজ বাড়ি ছেড়ে মুন্সীগঞ্জের বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের ড্যাগ্রাপাড়া গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় তার পূর্ব পরিচিত স্বাধীন নামের এক ব্যক্তি তাকে ডেকে নেয়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন,প্রাথমিক তদন্তে ডাকাতির কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। বিষয়টি আমরা গভীরভাবে তদন্ত করছি। তিনি আরও জানান মধ্য মাকহাটি মাঝিবাড়ির বাবু মাঝির পরিবারের সঙ্গে সানা মাঝির পরিবারের দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল।
বাবু মাঝির ভাই শিপন মাঝি হত্যা মামলায় সানার আট ভাই আসামি ছিলেন, যদিও পরে তারা বিচারে খালাস পান। স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক পরিচয়ের দিক থেকেও নিহত সানা মাঝির পরিবার সক্রিয় ছিল। পরিবারটি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং তারা সাবেক সংসদ সদস্য মৃণালকান্তি দাসের পক্ষে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে, এবং অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।