বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দলাদলি: মাদক সেবনের প্রমাণ চাইলেন বৈছাআ মুখপাত্র লিজা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈছাআ), চট্টগ্রাম নগরীর মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজাকে বহিষ্কারের পর তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণে দুই ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন তিনি। এই সময়ের মধ্যে মাদক সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করতে না পারলে নগর কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে-স্পষ্ট হুঁশিয়ারি তাঁর।
শনিবার (১৭ মে) রাত ৯টা ২৭ মিনিটে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠানো ৪৪ সেকেন্ডের ভিডিওবার্তায় এ হুঁশিয়ারি দেন লিজা।
অন্যদিকে বৈছাআ বলছে, বহিষ্কৃত ওই নেত্রী আইনি ব্যবস্থা নিতেই পারেন। দায়িত্বশীল জায়গা থেকে সামাজিকমাধ্যমে ভেইপ (ইলেকট্রিক সিগারেট) নিয়ে পোস্ট দেওয়া এবং ব্যক্তিগত ছবি আদান-প্রদান অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের প্রমাণ দেয়।
ভিডিওবার্তায় ফাতেমা খানম লিজা বলেন, 'আজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম নগর আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন এবং সদস্য সচিব নেজাম উদ্দিন আমার বিরুদ্ধে যে দুটি অ্যালিগেশন (অভিযোগ) এনেছে... প্রথমত অ্যালিগেশন এনেছে, আমি মাদক সেবনকারী।'
হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, 'আমি আল্টিমেটাম দিচ্ছি, আগামী দুই ঘণ্টার মধ্যে আমার মাদক সেবন প্রুভ করতে না পারে; তাহলে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।'
লিজা বলেন, 'দ্বিতীয়টি হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত জীবন নিয়ে। সম্পূর্ণ বেইসলেস (ভিত্তিহীন) একটা ইস্যু। আমার কথা একটাই, যদি তারা আগামী দুই ঘণ্টার মধ্যে এর কোনো প্রমাণ দিতে না পারে মাদকের বিষয়ে, তাহলে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।'
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম নগরীর আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন বলেন, 'মাদক হিসেবে সিগারেট ৫০টিরও বেশি দেশে নিষিদ্ধ। এগুলো স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী না, অপকারী। উনি দায়িত্বশীল জায়গা থেকে সামাজিকমাধ্যমে ভেইপ (ইলেকট্রিক সিগারেট) নিয়ে পোস্ট দেওয়া এবং যেসব ছবি আদান-প্রদান করেছেন, আমরা মনে করি এসব অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। আর অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ তো আছেই।'
আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'তিনি তার জায়গা থেকে আইনি ব্যবস্থা নিতেই পারেন।'
এর আগে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বৈছাআ নগর কমিটির আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন ও সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বহিষ্কারাদেশে জানানো হয়, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম মহানগর’ কমিটির মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজার মাদক সেবন এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ছবি/ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রায় ১৪শ শহীদ ও অর্ধলক্ষ আহতদের ওপর দাঁড়ানো এই প্ল্যাটফর্মের একজন সদস্যের এমন অনিয়ন্ত্রিত ও অসামাজিক কার্যকলাপ জনমনে প্রশ্ন তৈরি করেছে। তাই ফাতেমা খানম লিজাকে চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মুখপাত্র পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
একই দিন বৈছাআ নগর কমিটির আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন ও সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত পৃথক দুই আদেশে চাঁদাবাজির অভিযোগের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম নগরীর যুগ্ম সদস্য সচিব আবুল বাছির নাঈম এবং সংগঠক শাহরিয়ার সিকদারকেও বহিষ্কার করা হয়।