Times Today
অনুসন্ধান করতে টাইপ করুন

বাগেরহাটে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

বাগেরহাটে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

কালের বিবর্তনে ও আধুনিকতার ছোয়ায়  হারিয়ে যাচ্ছে বাগেরহাট সদর উপজেলার তালেশ্বর কুমারপাড়ার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। নানা সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ সঙ্কটের মুখে পড়েছে এই মৃৎশিল্পটি। প্লাস্টিক, মেলামাইন ও অ্যালুমিনিয়ামের পণ্যের ভিড়ে দিনে দিনে হারিয়ে যেতে বসেছে শত বছরের ঐতিহ্যের মৃৎশিল্প। তারপরও পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য এখনও ধরে রাখার চেষ্টা অনেকেরই।আর আগের মতো নাই, দিন পাল্টাচ্ছে। মানুষ আর আমাদের জিনিসপত্র তেমন একটা নেয় না। চাহিদা কম, তার উপর আবার সকল জিনিসের দাম বেশি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় , বাগেরহাট সদর উপজেলার তালেশ্বর কুমারপাড়ার মৃৎশিল্পীদের বসবাস ।এখানকার প্রায় ১৫টি পরিবার এখনও মাটির তৈজসপত্র তৈরির কাজে যুক্ত, যদিও একসময় ২০০টির বেশি পরিবার মৃৎশিল্প দের সাথে জড়িত ছিল। এখন এই পেশা ছেড়ে জীবন-জীবিকার জন্য অন্য পেশার দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছেন।

তালেশ্বর কুমারপাড়ার প্রবীণ মৃৎশিল্পী রবিন পাল বলেন,মৃৎশিল্পীরা প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের জিনিসপত্র বের হওয়ার কারণে মাটির তৈরি জিনিসপত্র এখন আর আগের মতো চলে না। আগে তেমন একটা প্লাস্টিক এবং অ্যালুমুনিয়াম জাতীয় পণ্য বাজারে না থাকায় মাটির তৈরি কলসি, হাঁড়ি, পাতিল, সরা, মটকা, ফুলের টপসহ নানা সামগ্রী বেশি বেশি বিক্রি হতো। কিন্তু এখন প্লাস্টিক-অ্যালুমিনিয়াম জাতীয় পণ্যে বাজারে সয়লাব এবং তার দাম কম থাকায় প্রতি ঘরে ঘরে এসব সামগ্রীর ব্যবহার বেড়ে গেছে। যার কারণে মাটির তৈরি তৈজসপত্র এখন তেমন একটা বিক্রি হয় না। ফলে মৃৎশিল্পীরা পরিবার নিয়ে আর্থিক সঙ্কটে দিন কাটচ্ছেন।

তিনি আরোও বলেন, মাটির তৈরি জিনিসের উৎপাদন প্রক্রিয়া বেশ কষ্টসাধ্য। মাটি চাকার ওপরে বসিয়ে থালা, বাটি, দইয়ের মালশা, পানির পাত্রসহ বিভিন্ন তৈজসপত্র তৈরি করা হয়। এরপর সেগুলো রোদে শুকানো হয়, লাল মাটির তরলের মধ্যে ডুবিয়ে রঙ করা হয়, এবং পরবর্তীতে একসাথে পুড়িয়ে বাজারজাত করা হয়।কিন্তু পরিশ্রমের তুলনায় লাভ যে খুব সামান্য।এক মাসে ১৫-১৬ হাজার টাকা খরচ করলে লাভ থাকে মাত্র ৮ হাজার টাকার মতো। পরিবারের সবাই মিলে দিন-রাত পরিশ্রম করেও তেমন কিছু থাকে না। অভাব অনটনে দিন কাটছে।

 সুমন পাল নামের এক শিল্পী বলেন, বাপ-দাদার কাছে শেখা আমাদের এই জাত ব্যবসা আজও আমরা কিছুটা ধরে রেখেছি। কামাল্লাসহ আশপাশের এলাকায় এক সময় মাটির তৈরি জিনিসের ব্যাপক চাহিদা ছিল, কিন্তু বর্তমানে তেমন একটা চাহিদা নেই। আর মাটি থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম যে পরিমানে বাড়ছে কাজ করে আর লাভের মুখ দেখিনা।

মৃৎশিল্পী নমিতা রাণী পাল বলেন, বাপ-দাদার পেশা ধরে রেখেছি। এছাড়া কোন কাজ জানি না। এতো কষ্ট করে সব তৈরি করি। তাতেও বাজারে তার কোন চাহিদা নেই। বিভিন্ন হাটে দোকান দিয়ে বেড়াই। যা বিক্রি হয়, তাতে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। ছেলে- মেয়েদের নিয়ে কোন রকম দিন কাটাচ্ছি।

খগেন পাল একজন শিল্পী বলেন, “বিদ্যুৎচালিত চাকা পেলে আমাদের কাজ অনেক সহজ হতো। এতে নতুন প্রজন্মেরও আগ্রহ তৈরি হতে পারত। আমাদের এলাকার কয়েকটি পরিবার বিদ্যুৎ চালিত চাকায় কাজ করে। হাতে চালিত বড় চাকায় কাজ করতে অনেক কষ্ট হয় তাই এখন আর কেউ এই কাজ শিখতে চায় না, কারণ এতে কষ্ট বেশি আয় কম।

এই শিল্পকে নতুনভাবে বাঁচিয়ে তুলতে সরকারি সহায়তার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

তালেশ্বর গ্রামের দিপালী রানী বলেন , আগের মত মেলাতেও এখন বেচাকেনা কমে গেছে। এখন ফুলদানি, ডিনার সেট, চায়ের কাপ সহ মাটির তৈরি কিছু সৌখিন পণ্যের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু প্রচারের অভাবে মালামাল বিক্রি হচ্ছে না। আমি এই পেশায় ৩০ বছর ধরে আছি। আমার সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়ে অন্য পেশায় দিতে চাই। এই পেশার ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

স্থানীয়দের আশা, যদি মানুষ আবার মাটির তৈরি জিনিসের দিকে ফিরে আসে, যদি পরিবেশ রক্ষার জন্য এই পণ্যকে জনপ্রিয় করা হয়, তাহলে হয়তো আবারো কুমার পাড়ার ঘরে ঘরে চাকা ঘুরবে মৃৎশিল্পের।

স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষক দীপক কুমার পাল বলেন, “মাটির তৈরি পণ্য একসময় আমাদের সংস্কৃতির অংশ ছিল। কালের বিবর্তনে এই শিল্প এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। পরিবেশবান্ধব হওয়া সত্ত্বেও প্লাস্টিকের আধিপত্যে এই পণ্য হারিয়ে যাচ্ছে।এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে মৃৎশিল্পীদের জন্য প্রশিক্ষণ ও আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করতে হবে। কম সুদে ঋণ প্রদান করতে হবে, যাতে তাঁরা বড় পরিসরে উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারেন। মাটির তৈরি পণ্যকে বাজারজাত করার জন্য সরকারি উদ্যোগ নিতে হবে। প্লাস্টিক ও মেলামাইনের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জন সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে।

বাগেরহাট বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মোঃ শরীফ সরদার বলেন, বাগেরহাটের তালেশ্বরে পাল পাড়াতে স্থানীয় কিছু পরিবার এখনো মাটির তৈজসপত্র তৈরি করছে। বংশপরম্পরায় এই কাজ তারা করছে। এটি আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী শিল্প। বর্তমান সময়ের সাথে তারা আধুনিকায়ন হতে না পারায় এই শিল্প অনেকেই ছেড়ে দিচ্ছে। তারা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। যদিও মাটির তৈরি জিনিসপত্রের এখনো চাহিদা রয়েছে। এই ক্ষেত্রে বিসিক এর পক্ষ থেকে তাদেরকে সহায়তা করার সুযোগ রয়েছে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিসিক এর পক্ষ থেকে তাদেরকে প্রশিক্ষণেরও সুযোগ রয়েছে। তাদের যদি আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন হয়, ঋণের প্রয়োজন হয় সেটিরও ব্যবস্থা বিসিক করবে। তারা যদি মনে করে তাদের পণ্যটির মার্কেটিং প্রয়োজন সে ক্ষেত্রেও আমরা তাদের পাশে থাকবো।


তিন মাসে ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা

তিন মাসে ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ভারতের নাম প্রত্যাহার

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ভারতের নাম প্রত্যাহার

লন্ডন বৈঠকে দলীয় রাজনীতির বিশুদ্ধতা ও সংস্কার প্রাধান্য পাক

লন্ডন বৈঠকে দলীয় রাজনীতির বিশুদ্ধতা ও সংস্কার প্রাধান্য পাক

বাকিংহাম প্যালেসে রাজা চার্লসের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

বাকিংহাম প্যালেসে রাজা চার্লসের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

২৪২ আরোহীর কেউই হয়তো বেঁচে নেই: পুলিশ

২৪২ আরোহীর কেউই হয়তো বেঁচে নেই: পুলিশ

জীবননগরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মাঝে জামায়াতের আর্থিক সহায়তা

জীবননগরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মাঝে জামায়াতের আর্থিক সহায়তা

জুলাই ঘোষণাপত্র’ বাস্তবায়ন না হলে দেশে আবারও স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে

জুলাই ঘোষণাপত্র’ বাস্তবায়ন না হলে দেশে আবারও স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে

মাজারে গামছা পড়া অবস্থায় মাজারে শুয়ে আছেন বিখ্যাত চলচিত্র ও নাট্যকার সমু চৌধুরী

মাজারে গামছা পড়া অবস্থায় মাজারে শুয়ে আছেন বিখ্যাত চলচিত্র ও নাট্যকার সমু চৌধুরী

কেন পড়বো বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ?

কেন পড়বো বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ?

মানুষ আর মার্কা দেখে ভোট দেবে না ব্যক্তি দেখে ভোট দিবে : শামীম কামাল

মানুষ আর মার্কা দেখে ভোট দেবে না ব্যক্তি দেখে ভোট দিবে : শামীম কামাল

রাজাপুরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জমি দখলের চেষ্টা, পরিবার অবরুদ্ধ — এলাকায় চরম উত্তেজনা

রাজাপুরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জমি দখলের চেষ্টা, পরিবার অবরুদ্ধ — এলাকায় চরম উত্তেজনা

ভারতের ইতিহাসে ভয়াবহ যত প্লেন দুর্ঘটনা

ভারতের ইতিহাসে ভয়াবহ যত প্লেন দুর্ঘটনা

ভারতেই প্রথমবারের মতো বিধ্বস্ত হলো বোয়িং ৭৮৭

ভারতেই প্রথমবারের মতো বিধ্বস্ত হলো বোয়িং ৭৮৭

ভারতে প্লেন দুর্ঘটনা: প্রশ্নের মুখে এয়ার ইন্ডিয়ার সুরক্ষা

ভারতে প্লেন দুর্ঘটনা: প্রশ্নের মুখে এয়ার ইন্ডিয়ার সুরক্ষা

মেডিকেলের ছাত্রাবাসে বিধ্বস্ত হয় প্লেনটি

মেডিকেলের ছাত্রাবাসে বিধ্বস্ত হয় প্লেনটি

লাল সবুজের পতাকা উড়লো গ্রেট ওয়ালে: শেরপুরের সেলিমের জয়ে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ

লাল সবুজের পতাকা উড়লো গ্রেট ওয়ালে: শেরপুরের সেলিমের জয়ে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ

“নবারুণ প্রিমিয়ার লিগ” সিজন-৬ এর ট্রফি উন্মোচন

“নবারুণ প্রিমিয়ার লিগ” সিজন-৬ এর ট্রফি উন্মোচন

বিএনপিকে ল্যাং মারতে যেয়ে নিজেদের ঠ্যাং না ভেঙ্গে যায়, প্রিন্স

বিএনপিকে ল্যাং মারতে যেয়ে নিজেদের ঠ্যাং না ভেঙ্গে যায়, প্রিন্স

বটি দিয়ে কুপিয়ে দুই সন্তানকে হ*ত্যা করেন মা

বটি দিয়ে কুপিয়ে দুই সন্তানকে হ*ত্যা করেন মা

ধর্ষণ নয়, ষড়যন্ত্র: ছেলের নির্দোষ প্রমাণে সংবাদ সম্মেলন মায়ের

ধর্ষণ নয়, ষড়যন্ত্র: ছেলের নির্দোষ প্রমাণে সংবাদ সম্মেলন মায়ের

আপন দুই ভাইসহ সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বৃদ্ধা নিহত

আপন দুই ভাইসহ সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বৃদ্ধা নিহত

নোয়াখালীতে কৃষককে মারধর ও জমি দখলের অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে

নোয়াখালীতে কৃষককে মারধর ও জমি দখলের অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে

ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকারিভাবে পৃথক অধিদপ্তর গঠন করা হবে

ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকারিভাবে পৃথক অধিদপ্তর গঠন করা হবে

ইউপি সদস্যর বাড়িতে বিয়ের দাবিতে চাচির অনশন

ইউপি সদস্যর বাড়িতে বিয়ের দাবিতে চাচির অনশন

আম পাড়াকে কেন্দ্র করে ঝগড়ায় প্রাণ গেলো রোজাদার নারীর

আম পাড়াকে কেন্দ্র করে ঝগড়ায় প্রাণ গেলো রোজাদার নারীর

দু'শ টাকার জন্য বন্ধুদের হাতে বন্ধু খুন, পুলিশের উপস্থিতিতে আসামীপক্ষের ধান বিক্রি

দু'শ টাকার জন্য বন্ধুদের হাতে বন্ধু খুন, পুলিশের উপস্থিতিতে আসামীপক্ষের ধান বিক্রি

বকশীগঞ্জে মসজিদের জমি দখল ও কবরস্থানের জমি বিক্রির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

বকশীগঞ্জে মসজিদের জমি দখল ও কবরস্থানের জমি বিক্রির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

সাভার উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার্স সোসাইটি (সুজ) এর ২৮ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে

সাভার উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার্স সোসাইটি (সুজ) এর ২৮ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে

শিশু বাচ্চা নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলো পিতা, শিশু ছিনতাইকারী বলে বেধড়ক পেটালো জনতা

শিশু বাচ্চা নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলো পিতা, শিশু ছিনতাইকারী বলে বেধড়ক পেটালো জনতা

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে স্বৈরাচার হাসিনার পতন সবক্ষেত্রেই অগ্রণী ভুমিকায় সিরাজগঞ্জের মানুষ, বাচ্চু

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে স্বৈরাচার হাসিনার পতন সবক্ষেত্রেই অগ্রণী ভুমিকায় সিরাজগঞ্জের মানুষ, বাচ্চু

সব খবর