প্রেমিকের অবহেলায় বিষপান, দশম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়ার মৃত্যু

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় প্রেমঘটিত কারণে বিষপান করে সুমাইয়া আক্তার (১৫) নামে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) গাজীপুরের মাওনা এলাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত সুমাইয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি গ্রামের দিনমজুর সাহাব উদ্দিন ও গৃহিণী জোছনা আক্তার দম্পতির মেয়ে। সে রোয়াইলবাড়ি ফাজিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একই ইউনিয়নের নিলাম্বরখিলা গ্রামের মো. আরজু মেম্বারের ছেলে এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থী পূর্ণ’র সঙ্গে সুমাইয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে গত কিছুদিন ধরে পূর্ণ তাকে এড়িয়ে চলছিল এবং অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে বলে সুমাইয়ার চিরকুটে উল্লেখ রয়েছে।
গত রোববার বিষপান করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে সুমাইয়া। প্রথমে তাকে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও ঢাকায় নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও পথেই তার মৃত্যু হয়।
সুমাইয়ার মা জোছনা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার কোনো ছেলে নেই, মেয়েরাই আমার ভরসা ছিল। পূর্ণ আমার মেয়েকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ধোঁকা দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।”
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, “মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একটি অপমৃত্যু মামলা প্রক্রিয়াধীন। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার বিষয়ে পূর্ণ’র বড় ভাই আনিসুল হক মুঠোফোনে বলেন, “আমি বর্তমানে কেন্দুয়ার বাইরে। ঘটনাটি এলাকাবাসীর মাধ্যমে জেনেছি। এর আগে কিছুই জানতাম না।”
এদিকে স্থানীয়দের মধ্যে কেউ কেউ দাবি করেছেন, সুমাইয়া অন্তঃসত্ত্বা ছিল। যদিও বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করলে পুলিশ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এক তরুণীর এমন মর্মান্তিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।