বৃষ্টি নামলেই ডুবে যায় বাগেরহাট শহর, রাস্তাঘাট ,পৌরসভা

একটু ভারী বৃষ্টি হলেই ডুবে যায় বাগেরহাট শহের রাস্তা ঘাট ও পৌরসভা । ড্রেন উপচে সড়ক, ঘরবাড়ি ও দোকানপাটসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে গেছে। এ পানি নামতে কোথাও কয়েক ঘণ্টা আবার কোথাও কয়েকদিনও লেগে যেতে পারে। এতে দুর্ভোগে পড়ে শিক্ষার্থী, কর্মজীবী সব খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।
ভারী বর্ষণের কারণে রাস্তাঘাট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, শহরের বহু এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। বিশেষ করে বাগেরহাট পৌরসভা , শহরের রাহাতের মোড়, সাধনার মোড়, নাগেরবাজার, শালতলা , বাসাবাটি, নূর মসজিদ,খাদদ্বার,লঞ্চঘাট, পুরাতন বাজার, মুনিগঞ্জ হাসপাতাল রোড, পোস্ট অফিসের সামনের সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ,শহরের প্রধান খালগুলো দখল ও সংকুচিত হওয়া, অপর্যাপ্ত নর্দমাব্যবস্থার অভাব, বক্স-ড্রেনের নামে খাল–নালা হত্যাসহ পর্যাপ্ত পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় দিন দিন শহরের জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাজুক ।পানিপ্রবাহের ছোট-বড় নালায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, বিভিন্ন স্থানে নালা সরু করে ফেলা ও সঠিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করার কারণে অল্প সময়ের বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।আর পৌর কর্তৃপক্ষ জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।সামান্য বৃষ্টিতেই দোকানে পানি ঢুকে পড়ে, নষ্ট হয় মালামাল। এভাবে চলতে থাকলে একদিন তো ডুবে মরতে হবে।
এদিকে টানা বৃষ্টির ফলে পেটের টানে রাস্তায় বের হওয়া রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। যাত্রী না থাকায় যেমন আয় নেই, তেমনি পানিতে নিমজ্জিত রাস্তায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকে।
রিকশাচালক হাসান বলেন, চার জনের সংসার চলে আমার পায়ের ওপর। তাই সকালে বৃষ্টির মধ্যেই রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু লোকজন নেই। দেড়টা পর্যন্ত ১০০ টাকা হয়েছে। কি আর করা, একেতো বৃষ্টি তার ওপর রাস্তাগুলো পানিতে ডুবে গেছে।
বাসাবাটির বাসিন্দা সুমাইয়া বেগম বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের মেঝেতে পানি উঠে যায়। আমাদের এখানকার ছয়টি পরিবারের একই অবস্থা। পানি নিষ্কাশন না হওয়া পর্যন্ত আমরা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাব না।
পথচারী তানিয়া জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ড্রেন পরিষ্কার না করায় বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। হাঁটু সমান ময়লা পানির মধ্যেই চলাচল করতে হচ্ছে। আমরা দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান চাই।
দশম শ্রেণীর ছাত্র সিহাব বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই আমাদের এই ঘরবাড়ি তলিয়ে যায় খাটের উপরে উঠে পড়ালেখা করতে হয়। আমার পরীক্ষা চলে আমি কিভাবে পড়বো তাই বুঝতে পারছি না। আর ভালোভাবে পড়তে না পারলে তো পরীক্ষাও ভালো হবে না। সকালে যেতে হলে জামা কাপড় ভিজিয়ে পরীক্ষার হলে যেতে হয়। আমাদের খুব অসুবিধা হচ্ছে যদি ড্রেনটা যদি পরিষ্কার থাকতো তাহলে এত পানির জলাবদ্ধতা থাকতো না।
শুধু শহরেই নয়, জেলার মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও কচুয়া উপজেলার নিম্নাঞ্চলেও জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকার অনেক ঘেরে পানি ঢুকে মাছ ভেসে গেছে।
বাগেরহাট পৌরসভার প্রশাসক ডা. ফখরুল হাসান বলেন, পৌর শহরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। কাজগুলো দৃশ্যমান হলে জনভোগান্তি কমবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।