ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেড় হাজার মানুষ নিহত: দাবি মান্নার

ছাত্র-জনতার চলমান আন্দোলন দমনে সরকার দেড় হাজারের বেশি মানুষ হত্যা করেছে বলে বিস্ফোরক দাবি করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তার ভাষ্য, “শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে যে বর্বর হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে—জুলাই-আগস্টে মাত্র ২০ দিনের মধ্যে দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করেছে—এটা ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়।”
রোববার (৬ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ গণজাগরণ দল আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। ২০১১ সালের ৬ জুলাই তৎকালীন সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবেদিন ফারুকের ওপর হামলায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আন্দোলনের মূল্য ও নিহতদের পরিচয় তুলে ধরেন মান্না “আলাল বললেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান, কিন্তু আমি বলি—এটা শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থান,” বলেন মান্না। তিনি জানান, নিহতদের অধিকাংশই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। নিজ জেলা বগুড়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বগুড়ায় ১১ জন নিহত হয়েছিল—তারা সবাই খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত। জয়নুল আবেদিন ফারুকের ওপর যে নির্যাতন হয়েছিলো, তা এক সময় ম্লান হয়ে গেছে। কিন্তু বর্তমান সরকারের গণহত্যা ইতিহাসে অমোচনীয় দাগ হয়ে থাকবে।”
আগামী নির্বাচনে বিএনপির বিজয়ের কথা উল্লেখ করে মান্না বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার কথা এবং সেই নির্বাচনে বিএনপিই জিতবে।” রাজনৈতিক দলগুলোর নানা বক্তব্যের পরও জনগণ যে বিএনপিকেই আশার প্রতীক হিসেবে দেখছে, তা তিনি জোর দিয়ে বলেন।
“এই জনপ্রিয়তাকে মব কালচারের মাধ্যমে নষ্ট করা উচিত নয়। এখন দেশ গড়ার সময়, ভাঙার নয়। আওয়ামী লীগ আমলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ছিল বিএনপি। কিন্তু প্রতিশোধ নয়, জনগণের কল্যাণে কাজ করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।”
৭৫ বছর বয়সী এই রাজনীতিক বলেন, “হয়তো আর ৫-১০ বছর বাঁচবো না। তাই চাই, তরুণ প্রজন্ম দায়িত্ব নিক। যদি তারা জ্ঞান ও বুদ্ধিকে গুরুত্ব দেয় এবং আন্তরিকভাবে দেশ গড়তে চায়, তাহলে তারাই পারবে নতুন বাংলাদেশ গড়তে।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাবেক সংসদ সদস্য লায়ন মো. হারুনুর রশিদ, গণজাগরণ দলের সভাপতি হাবিব আহমেদ আশিক, সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনির, ইসমাইল হোসেন সিরাজীসহ আরও অনেকে।
বক্তারা সবাই ২০১১ সালের হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।