সরকারি প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ

অবশেষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) একটি প্রস্তাব প্রণয়ন করে তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদন পেলে বছরে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ৩৪১ কোটি ৪৯ লাখ ৫৪ হাজার ৯৪০ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডিপিই’র পাঠানো প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ধাপে পাঠানো হবে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। সেখান থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হবে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য। অনুমোদন পাওয়ার পরই অফিস আদেশ জারি করা হবে।
প্রস্তাব পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশনস) মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, “রোববার (১৩ জুলাই) প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে রিটকারী ৪৫ জন ছাড়াও দেশের সব প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড উন্নীত করা সম্ভব হবে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ মুহূর্তে নির্দিষ্ট সময় বলতে পারছি না, তবে আমরা আন্তরিকভাবে বিষয়টি এগিয়ে নিচ্ছি।”
বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের মোট পদসংখ্যা ৬৫ হাজার ৫০২টি। এর মধ্যে বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩২ হাজার ৩৫২ জন।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জুন হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন ১১তম গ্রেড থেকে দশম গ্রেডে উন্নীত করে অফিস আদেশ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর আগে ১৩ জুন প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে উন্নীত করতে ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ।
এই রায়ের সূত্রপাত ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, যখন হাইকোর্ট রিটকারী শিক্ষকদের পক্ষে রায় দেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দিলেও বাস্তবায়নে বৈষম্য দেখা দেয়। প্রশিক্ষিতদের জন্য ১১তম গ্রেড ও অপ্রশিক্ষিতদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করা হয়, যা বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে রিয়াজ পারভেজসহ ৪৫ জন শিক্ষক হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।