ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে ভোলায় নৌযোগাযোগ বন্ধ, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা

ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ভোলায়, এ কারণে ভোলার সকল নৌযোগাযোগ বন্ধ, প্লাবিত হচ্ছে জেলার নিম্নাঞ্চল, অতিবৃষ্টিতে শহর সহ বিভিন্ন স্থানে তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এতে পৌর শহরের অনেক এলাকার রাস্তায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর পানি উত্তাল হয়ে উঠেছে। স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি চার থেকে পাঁচ ফুট বেড়ে যাওয়ায় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে বিচ্ছিন্ন চর ও বাঁধের বাইরের হাজারো ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীতীরবর্তী অসহায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তজুমদ্দিন উপজেলার স্লুইসগেট এলাকায় সদ্য নির্মিত রিং বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবেশ করেছে লোকালয়ে এমনটি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার পাঁচটি নৌরুটে লঞ্চ এবং দুটি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ভোলা নদীবন্দরের উপ-পরিচালক মো. রিয়াজ হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সমুদ্রবন্দর এলাকায় ৩ নম্বর বিপৎসংকেত জারি রয়েছে। তাই হাতিয়া-ঢাকা, ভোলা-লক্ষ্মীপুর, ভোলা-আলেকজান্ডার, ভোলা-তজুমদ্দিন-মনপুরা এবং চরফ্যাশন বেতুয়া-মনপুরা রুটে লঞ্চ চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
ভেদুরিয়া-লাহারহাট এবং ইলিশা-মজুচৌধুরী ঘাট ফেরি চলাচলও বন্ধ রয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি ভোলার ব্যবস্থাপক মো. কাওসার আহমেদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে বুধবার রাত থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ-বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত অনেক এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগ ফিরে আসেনি। ওজোপাডিকো ভোলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউসুফ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জেলায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি ও তারের ওপর গাছ পড়ে আছে।
জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় ৮৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র, ১৪টি মাটির কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিপিপির ১৩ হাজার ৮৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন। বিচ্ছিন্ন চর থেকে মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হচ্ছে। সাত উপজেলায় আটটি কন্ট্রোলরুম চালু এবং ৯৮টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণও মজুত রয়েছে।