ভোলায় কোরবানীর জন্য প্রস্তুত ১ লাখ ২ হাজার ৭ শ' ৬৯ টি গরু

কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে ভোলার খামারীরা তাদের গরু পরিচর্যা ও মোটাতাজা করনে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে। প্রাকৃতিক উপায়ে সবুজ ঘাস, খৈল, কুটা, দানাদার খাদ্য ও দেশীয় স্বাস্থ্য সম্মত খাবারের মাধ্যমে গরু গুলোকে হৃষ্টপুষ্ট করার কাজেই খামারীদের সময় কাটছে। অপর দিকে ভারতী গরু অনুপ্রবেশে লোকসানে পড়ার সংখ্যায় ভুগছেন খামারীরা। প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, জেলার ৭ উপজেলায় কোরবানীর জন্য এবার ১লাখ ২ হাজার ৭ শ' ৬৯ টি গরু প্রস্তুত রয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় বেশী। বাস্তবে গরুর চাহিদা রয়েছে, ৯০ হাজার ২ শ' ৬৩ টি গরু।
এদিকে গরু খামারীরা জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গরু খাদ্যের দাম অনেক বেশী, তাই গরু মোটাতাজা করনে তারা হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও ভালো মূল্যে গরু বিক্রি করতে পারলে খামারীরা তাদের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন। কিন্তু ভারতীয় গরু গুলো যদি বাজার দখলে নেয় তাহলে এবার কোরবানীতে এখানকার খামারীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
ভোলা সদরের ধনিয়া ইউনিয়নের খামারী ওসমান গনি জানান, তার খামারে এবার কোরবানীর জন্য অর্ধশত গরু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দু'একটি বিক্রি হলেও এখনো ক্রেতাদের সারা মিলছেনা। তিনি জানান, বাজারে ভারতীয় গরু ঢুকলেই তাদের দেশীয় জাতের সলিট গরুগুলো বিক্রি হবেনা। লোকসানের ঘানি টানতে হবে তাদেরকে।
সদর উপজেলার চর আনন্দ গ্রামের আক্তার ডেইরি ফার্মের মালিক খামারী আক্তার হোসেন জানান, তার খামারে এবার দেশীয় জাতের প্রায় শতাধিক গরু প্রস্তুত রয়েছে। অনেক ক্রেতা আসলেও এখনো একটি গরুও বিক্রি করতে পারেনি। তবে অসাধুচক্র ভারতীয় গরু ও বিষাক্ত কেমিক্যাল দ্বারা মোটাতাজা করে ফুলে ফাঁফানো গরুগুলো বাজারে আনলে তাতে বিপাকে পড়তে হবে। কেননা প্রতারকচক্রের ভেল্কীবাজিতে ক্রেতারা দেশীয় পূষ্ট গরু ও বিষাক্ত কেমিক্যালযুক্ত গরু চিনে উঠতে পারেননা। তথ্যমতে, ভোলার সাত উপজেলায় ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার গরু খামার রয়েছে। প্রতিটি খামারেই অধিক সংখ্যক দেশীয় গরু কোরবানীর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ওদিকে কেমিক্যাল ব্যবহারের মাধ্যমে গরু মোটাতাজাকরনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠে রয়েছেন প্রাণী সম্পদ অধিপ্তরের একাধিক টিম। এ টিমের সদস্যরা জেলার প্রান্তিক পর্যায়ে মনিটরিং করছে বলে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ভোলা জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম খাঁন জানান, এবার জেলায় ১লাখ ২ হাজার ৭ শ' ৬৯ টি গরু প্রস্তুত রয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় বেশী। বাস্তবে গরুর চাহিদা রয়েছে, ৯০ হাজার ২ শ' ৬৩ টি। তিনি বলেন, জেলার প্রতিটি গরুহাটে আমাদের অধিক সংখ্যক মনিটরিং টিম কাজ করবে, পাশাপাশি পশু চিকিৎসা ও কেমিক্যাল দ্বারা মোটাতাজা করা গরু চিহ্নিত করতে ভেটেনারী চিকিৎসক দল নিয়োজিত থাকবে।