চুক্তিপত্র গোপন করে উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে পিতা পুত্রের হয়রানিমূলক মামলা!

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সাফিনা সাইলেজের মালিক ও উদ্যোক্তা মো. শামীম হোসেনের বিরূদ্ধে হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। উদ্যোক্তা মো. শামীম হোসেন ব্যবসার পাশাপাশি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার গৌরীপুর উপজেলা প্রতিনিধি কাজ করে আসছেন।
উদ্যোক্তা শামীম হোসেন জানায়, গৌরীপুুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক হাবিব উল্লাহর ছেলে ডা. আমান উল্লাহর সাথে ২০২১ সালে মুরগীর ব্যবসা করেন। ব্যবসার শুরুতে লাভজনক হলেও পরবর্তীতে মুরগীর বাজারে দামে ধস নামায় ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্থ ও বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর গৌরীপুর স্বজন সমাবেশ কার্যালয়ে সামাজিক সালিশ হয়। সালিশে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ডা. আমান উল্লাহকে ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৫০০ টাকা প্রদানের বিষয়ে সালিশে উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সিদ্ধান্ত দেন।
এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে গত ৩১ জানুয়ারীর মধ্যে পরিশোধযোগ্য শর্তে ৮৫ হাজার টাকার একটি চেক যার নং সিটিএলএইচ ৮০৭৫২৯ প্রদান করা হয়। একই সাথে চলতি বছরের ৩১ডিসেম্বরের মধ্যে ১২টি সমান কিস্তিতে পরিশোধ করার শর্তে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫০০ টাকার একটি চেক যার নং সিটিএলএইচ ৮০৭৫৩০ প্রদান করা হয়। দুটি চেকেই রূপালী ব্যাংক গৌরীপুর উপশাখার হিসাব নং ০৮৪৪০২০০০২০৮১। এ সংক্রান্ত বিষয়ে ৩০০ টাকার ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষীগণের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের মাঝে এক অঙ্গিকারনামা সম্পাদিত হয়।
তবে, সেই চুক্তি নামার শর্ত ভঙ্গ করে এবং অসত্য বিবরণে হয়রাণির উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলক লিগ্যাল নোটিশ পাঠায়, জবাব দেয়ার পরেও দুটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন ডা. আমান উল্লাহ। দু’টি মামলাতেই সাক্ষী হিসাবে রয়েছেন ডা. আমান উল্লাহ’র পিতা গৌরীপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হাবিব উল্লাহ।
মামলায় ডা. আমান উল্লাহ উল্লেখ করেন, গত বছরের ১ নভেম্বরে মৌখিক অঙ্গীকারে কর্জ হিসাবে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫শ টাকা দেন। যার বিপরীতে চেক প্রদানের তারিখ লিখেন গত ১৭ ফেব্রুয়ারী ব্যাংক থেকে ২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী চেক ডিসঅনার করিয়ে ৩০ এপ্রিল ২০২৫ এ সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা করেন।
একই সাথে গত বছরের ৫ জুলাইয়ে ৮৫ হাজার টাকা অনুরূপভাবে শামীম হোসেনকে কর্জ দেন। চেক দেয়া হয়েছে ৩১ জানুয়ারি। ব্যাংক থেকে ৯ ফেব্রুয়ারী ২৫ ডিজঅনার করিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারী ২৫ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান এবং ১৫ এপ্রিল ২০২৫ এ সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা করে।
শামীম হোসেন বলেন, আমার বড় ভাই ডা. আমান উল্লাহ শেয়ারে মুরগীর ব্যবসা ছিল পরবর্তীতে মুরগীর বাজারে ধস নামায় লস হয়ে যায়। শালিস দরবারে আমাকে সালিশকারীরা আমাকে চেক দিতে বলাই আমি আমান ভাইকে উপস্থিত সবার সামনে ২টা চেক দেই। পরে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫০০ টাকা যাদের মাধ্যমে চেক দিয়েছি তাদের মাধ্যমে হিসাব মত টাকা পরিষোধ করেছি এর পরে ও তিনি আমাকে উক্ত চেক ফেরত না দিয়ে মামলা করেছে চুক্তি পত্র গোপন করে। আমার কাছে শুধু ৮৫,০০০/- টাকা পাবে। আমার উক্ত চেক কোন নিজ নমীয় নয় আমার নিজ প্রতিষ্ঠান সাফিনা সাইলেজ নমীয় একাউন্ট।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১ নভেম্বর ইং তারিখে রোজ শুক্রবার উপস্থিত সাক্ষীগণের মোকাবেলায় ২ মাসের মধ্যে পরিশোধের মৌখিক অঙ্গিকার করিয়া নগদ ৭লাখ ৭৩হাজার ৫০০ টাকা এক তোরাতে কর্জ গ্রহন করেন। ২ মাস পার হওয়ার পরেও টাকা না দেওয়ায় গত চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারী ইং তারিখে বাদির নিজ বসত বাড়িতে উপস্থিত সাক্ষীগনের মোকাবেলায় বিবাদীর নিজ নামীয় রুপালি ব্যাংক গৌরীপুর উপশাখা (ময়মনসিংহ) ৭লাখ ৭৩ হাজার ৫০০ টাকার লিখিত স্বাক্ষরিত একটি চেক প্রদান করেন। যাহার হিসাব নং-০৮৪৪০২০০০২০৮১ ও চেক নং সিটিএলএইচ ৮০৭৫৮২৯। চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারী উক্ত ব্যাংকে টাকা না থাকায় চেকটি ডিজঅনার হয়। চেকটি ডিজঅনার হওয়ায় চলতি বছরের ২ মার্চে এ বাদির নিকট একটি উকিল নেটিশ পাটানো হয় এবং চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল ইং জেলা ময়মনসিংহ বিজ্ঞ সিনিয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৪ নং আমলী আদালত গৌরীপুর সি.আর ৩১২/২৫ এবং ৮৫০০০ টাকার আরও সি.আর ২৬৮/২৫ মামলা দায়ের করেন।
গৌরীপুর যুগান্তর প্রতিনিধি রইস উদ্দিন বলেন, আমার অফিসে সালিশ হয়েছিল। সালিশে একটি চুক্তিপত্র হয়েছিল।
এবিষয়ে মামলার বাদূ আমান উল্লাহ বলেন, এটা অনেক লম্বা কাহিনী। এবিষয়ে মোবাইলে কথা সম্ভব না। আপনাকে গৌরীপুরে দাওয়াত দিলাম। আপনি আসলে বিস্তারিত কথা বলব।