সুন্দরবনে হরিণ শিকারীদের হামলায় বন কর্মকর্তা আহত, ৩ শিকারী গ্রেপ্তার!
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জে হরিণ শিকারীদের হামলায় রানা দেব নামে এক বন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে আলোরকোল এলাকার ডিমেরচরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেবকে দুবলার শুঁটকি পল্লীর অস্থায়ী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হামলার পর বন বিভাগ অভিযান চালিয়ে তিন হরিণ শিকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। এসময় শিকারীদের ফেলে যাওয়া ১৮টি হরিণ ধরার ফাঁদ ও একটি ইঞ্জিনচালিত নৌযান উদ্ধার করা হয়। পালিয়ে যাওয়া অন্যদের গ্রেপ্তারে চিরুনি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া শিকারীরা হলেন—বাগেরহাট সদর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের রাফি হাসান (২৬), রামপাল উপজেলার সোনাতুনিয়া গ্রামের শাহিদ মল্লিক (২৮) এবং একই উপজেলার ঝালবাড়ি গ্রামের আলামিন আকুঞ্জি (২৭)।
আহত এসিএফ রানা দেব বলেন, সোমবার থেকে সুন্দরবনের দুবলার আলোরকোলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তিনদিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব শুরু হয়েছে। এই সুযোগে হিন্দু তীর্থযাত্রীর ছদ্মবেশে কিছু শিকারী বন এলাকায় প্রবেশ করে হরিণ শিকারে নামে। খবর পেয়ে বনরক্ষীদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনার সময় শিকারীরা হামলা চালায়।
তিনি আরও বলেন, বনরক্ষীরা একজন শিকারীকে ধরলে বাকিরা সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে ধৃত শিকারীকে ছাড়িয়ে নেয়। এতে আমি গুরুতর আহত হই।
রানা দেব জানান, এবারের রাস উৎসবে শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুমতিপত্র (পাস) দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শিকারীরা ভুয়া পরিচয়ে ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অনুমতিপত্র সংগ্রহ করে বনাঞ্চলে প্রবেশ করে। এর আগের দিন রবিবারও আলোরকোলের হোন্দল এলাকায় হরিণ শিকারের সরঞ্জামসহ সাত শিকারীকে আটক করা হয়।
দুবলার চরের অস্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, এসিএফ রানা দেব শরীরের অভ্যন্তরে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। তাঁকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, "এসিএফ রানা দেবের ওপর হামলাকারী তিন শিকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাকে মারধর ও হরিণ শিকারের চেষ্টার অভিযোগে আলাদা দুটি মামলা দায়ের করে মঙ্গলবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে। "
তিনি আরও বলেন, "রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে হরিণ শিকার রোধে বন বিভাগসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সুন্দরবনে কড়া নজরদারি বজায় রেখেছে। "


