রাষ্ট্রপতি কখনো স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেননি: ড. আসিফ নজরুল!
রাষ্ট্রপতি কখনোই স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেননি, সবসময় তা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায়— এমন মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘খসড়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫’ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “ভালো আইন একটি ভিত্তি হতে পারে, কিন্তু আইন করলেই রাষ্ট্র বদলে যায় না। আইন করার ক্ষেত্রে আমরা সফল হলেও প্রতিষ্ঠান গঠনে আমরা সীমাহীনভাবে ব্যর্থ।”
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “৭২ সালের সংবিধানে রাষ্ট্রপতির স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছিল, যাতে রাজনৈতিক প্রভাব না পড়ে। কিন্তু বাস্তবে রাষ্ট্রপতি কখনো স্বাধীনভাবে নিয়োগ দেননি, সবসময় প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই প্রধান বিচারপতি নিয়োগ পেয়েছেন।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “আমরা এমন প্রধান বিচারপতিকেও দেখেছি, যিনি মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এমনকি নির্বাচনী ব্যবস্থার ধ্বংসের নেতৃত্ব দিয়েছেন।”
উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমরা ইনস্টিটিউশনাল রিফর্মের পথে কিছুটা অগ্রসর হয়েছি, কিন্তু পুরোটা করতে পারিনি। নির্বাচিত সরকারকে এ দায়িত্ব নিতে হবে।”
‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “উপদেষ্টাদের কোনো সেফ এক্সিটের প্রয়োজন নেই, তবে জাতি হিসেবে আমাদের সেফ এক্সিট দরকার। ৫৫ বছর ধরে আমরা গুম, লুটপাট, ব্যাংক কেলেঙ্কারি, বিচারহীনতা— এসবের মধ্যে বেঁচে আছি। এই আত্মধ্বংসী রাষ্ট্র থেকে বেরিয়ে আসতে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান দরকার।”
তিনি বলেন, “উচ্চ আদালত, সংসদীয় কমিটি ও মানবাধিকার কমিশনকে অত্যন্ত শক্তিশালী করতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশে যে কেউ যে কোনো সময় ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হতে পারেন।”
একই অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “আগামী নির্বাচনের আগে মানবাধিকার নিয়ে সঠিক কাজগুলো সম্পন্ন করতে হবে। আজকের বাংলাদেশ রক্তের বিনিময়ে অর্জিত; আগামী দিনের বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়তে হবে।”
অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, লেজিসলেটিভ বিভাগের সচিব ডা. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন লিলারও বক্তব্য দেন।


