ভিটামিন ডি: সূর্যের আলো থেকে খাবারের প্লেটে
ভিটামিন ডি, যাকে “সানশাইন ভিটামিন” নামেও ডাকা হয়, মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান। প্রচুর সূর্যালোক পাওয়ার সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষ ভিটামিন ডি-ঘাটতিতে ভুগছেন। এই ভিটামিন শরীরে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফেটের শোষণ নিয়ন্ত্রণ করে, হাড় ও দাঁতের সুস্থতা নিশ্চিত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ভিটামিন ডি-এর অভাবে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া, পিঠে বা জয়েন্টে ব্যথা, পেশি দুর্বলতা এমনকি অস্টিওপোরোসিস, রিকেটস বা আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই সূর্যের আলোতে পর্যাপ্ত সময় কাটানোর পাশাপাশি খাবার থেকেও ভিটামিন ডি গ্রহণ জরুরি।
চলুন জেনে নিই, কোন খাবারগুলো ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণে সহায়ক—
১. গরুর দুধ
প্রতিদিন এক গ্লাস ফুল ফ্যাট দুধ ভিটামিন ডি-এর দৈনিক চাহিদার প্রায় ২০% পূরণ করতে পারে। এতে ক্যালসিয়ামও পর্যাপ্ত থাকে। ফ্যাট বাদ দিলে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে কমে যায়, তাই ফুল ফ্যাট দুধই উপকারী।
২. দই
প্রোটিন সমৃদ্ধ দই ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস। তবে দোকানের মিষ্টি দইয়ের বদলে বাড়িতে টক দই বানিয়ে খাওয়াই শ্রেয়।
৩. কমলার রস
টাটকা কমলার রসে ভিটামিন ডি-এর পাশাপাশি ভিটামিন সি থাকে। সকালে এক গ্লাস তাজা কমলার রস শরীরকে সতেজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৪. ওটমিল
ওটস ভিটামিন ডি ছাড়াও প্রয়োজনীয় খনিজ ও জটিল কার্বোহাইড্রেটে সমৃদ্ধ। প্রাতঃরাশে ওটস খেলে শরীরে শক্তি ও ভিটামিন ডি দুই-ই মেলে।
৫. মাশরুম
সূর্যের আলোতে জন্মানো মাশরুম ভিটামিন ডি-এর প্রাকৃতিক উৎস। প্রজাতি ভেদে ভিন্নতা থাকলেও সূর্যের আলোতে শুকানো মাশরুমে ভিটামিন ডি বেশি থাকে।
৬. ডিমের কুসুম
ডিমের কুসুম ভিটামিন ডি, প্রোটিন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টিতে ভরপুর। তবে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের ঝুঁকি এড়াতে দিনে একটি ডিম যথেষ্ট।
৭. চর্বিযুক্ত মাছ
সামুদ্রিক মাছ যেমন সালমন, টুনা, সার্ডিন ইত্যাদিতে প্রচুর ভিটামিন ডি থাকে। একইসঙ্গে এগুলো ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনেরও চমৎকার উৎস।
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি শুধু হাড়ের জন্য নয়, পুরো শরীরের সুস্থতার জন্য হুমকি। তাই নিয়মিত কিছুটা সময় সূর্যের আলোতে কাটানো এবং ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাসই হতে পারে শক্ত হাড়, মজবুত দাঁত ও সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি।


