রক্ষণশীলদের পাঁচ বছরের ক্ষমতার অবসান ঘটিয়ে উরুগুয়ের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন বামপন্থী রাজনীতিবিদ ইয়ামান্দু ওরসি। গতকাল রোববার দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ শেষে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফ্রেন্টে অ্যাম্পলিও অ্যালায়েন্সের (ব্রড অ্যালায়েন্স) প্রার্থী ছিলেন ইয়ামান্দু ওরসি। আর তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলে ন্যাশনাল পার্টির আলভারো দেলগাদো। তিনি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট লুইস লেকাইয়ে পাউর নেতৃত্বাধীন উদার ডানপন্থী রিপাবলিকান জোটের সদস্য।
গতকাল উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে ভোট হয়। প্রথম ধাপের ভোট হয়েছিল গত ২৭ অক্টোবর। দ্বিতীয় ধাপে ইয়ামান্দু ওরসি ও আলভারো দেলগাদোর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে।
দেলগাদো নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিয়ে ইয়ামান্দু ওরসিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল উরুগুয়েতে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করলেও ক্ষমতার পালাবদলের কারণে অর্থনৈতিক দিক থেকে দেশটিতে ব্যাপক কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখছেন না বিশ্লেষকেরা।
উরুগুয়ের নির্বাচনী আদালত জানিয়েছেন, ৯৪ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট গণনা করা হয়েছে। ইয়ামান্দু ওরসি ১১ লাখ ২৩ হাজার ৪২০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী আলভারো দেলগাদো পেয়েছেন ১০ লাখ ৪২ হাজার ১ ভোট।
উরুগুয়েতে ২০০৫ সালের নির্বাচনে রক্ষণশীলদের কয়েক দশকের লম্বা ক্ষমতার অবসান ঘটিয়ে বামপন্থীরা সরকার গঠন করেছিল। এরপর টানা তিন মেয়াদে বামপন্থী দল থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়। এ সময় অপরাধ বেড়ে যাওয়া, উচ্চ শুল্কহার ও মন্টিভিডিও বন্দর দিয়ে কোকেন পাচার বেড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা তৈরি হয়। এর ফলে ২০২০ সালের নির্বাচনে বামপন্থী জোট পরাজিত হয়।
২০০৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বামপন্থীদের শাসনামলে উরুগুয়েতে গর্ভপাত ও সমকামী বিয়ে বৈধ করা হয়েছিল। সে সময় লাতিন আমেরিকার প্রথম কোনো দেশ হিসেবে উরুগুয়েতে উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয়। আর বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ২০১৩ সালে বিনোদনমূলকভাবে গাঁজা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।