দাওয়াত খেতে যাওয়ার কথা বলে তিন ছেলে রিয়াদ (৮), হাসান (৫) ও হোসাইনকে (৫) নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন হবিবুর রহমান। এরপর তারা আর বাড়ি ফেরেনি। ১৯ দিন পেরিয়ে গেলেও সন্ধান মেলেনি তিন শিশুর। তাদের না পেয়ে উদ্বিগ্ন মা আয়শা বেগম। শুধু তারা না, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় গত ১৬ অক্টোবর থেকে আরও পাঁচজন নিখোঁজ হয়েছেন। ২১ দিনে এত জন নিখোঁজের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নিখোঁজরা হলো– সাঁথিয়া পৌরসভার পূর্ব ভবানীপুর গ্রামের হবিবুর রহমানের ছেলে রিয়াদ, হাসান ও হোসাইন, উপজেলার গৌরীগ্রাম ইউনিয়নের ঘুঘুদহ গ্রামের আসাদ শেখের ছেলে হামিম (১১), একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে সোহান (১০), আব্দুর রহিমের মেয়ে রাফিয়া খাতুন (১৩), কাশিনাথপুর ইউনিয়নের চণ্ডীপুর গ্রামের মৃত ফজলাল শেখের মেয়ে রিদি খাতুন (১৪) এবং রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের মালিয়ান্দাহ গ্রামের সুব্রত কর্মকার (৪৫)। তাদের নিখোঁজের বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় জিডি হয়েছে।
রিয়াদ, হাসান ও হোসাইনের মা আয়শা খাতুন জানান, কয়েক মাস আগে হবিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর বিয়েবিচ্ছেদ হয়েছে। আয়শা তিন ছেলেকে নিয়ে থাকেন। গত ১৭ অক্টোবর তাদের বড় মেয়ের কাছে রেখে জরুরি কাজে ঢাকায় যান তিনি। পরদিন সকালে হবিবুর বাড়িতে গিয়ে বড় মেয়েকে বলেন, তিন ছেলেকে নিয়ে তিনি বেড়া উপজেলায় দাওয়াত খেতে যাবেন। এরপর তাদের নিয়ে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু তারা আর ফেরেনি।
সুব্রত কর্মকারের ছেলে শুভ কর্মকার জানান, তাঁর বাবা সাঁথিয়া পৌরসভার আফতাবনগর (ছেঁচানিয়া) মহল্লায় ফুপুর বাড়িতে যান ৩০ অক্টোবর। পরদিন দুপুরে সেখান থেকে নিজ বাড়ি বাঘার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পর থেকে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না।
নিখোঁজ হামিমের বাবা আসাদ শেখ ও সোহানের বাবা সাইফুল ইসলাম জানান, ৩ নভেম্বর সকালে হামিম ও সোহান স্থানীয় একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়তে যায়। এরপর তারা আর বাড়ি ফেরেনি। রাফিয়া খাতুনের ফুপাতো ভাই আশিক হোসেন টিটু জানান, রাফিয়া তাদের বাড়ি থেকে ঘুঘুদহ দাখিল মাদ্রাসায় সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। ৩ নভেম্বর সকালে মাদ্রাসায় যাওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ। জোড়গাছা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আলেয়া খাতুন বলেন, এত নিখোঁজের ঘটনায় সন্তানদের বাসার বাইরে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন অনেক অভিভাবক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, নিখোঁজের ঘটনার সঙ্গে কোনো চক্র জড়িত কিনা, খতিয়ে দেখে উদ্ধারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান বলেন, নিখোঁজদের ব্যাপারে থানায় জিডি করা হয়েছে। তাদের উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।