আজ- বৃহস্পতিবার | ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৪:১৬
৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘আয়া রাম গয়া রাম’ কিংবা সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ

ভারতে বহুল প্রচলিত ও উচ্চারিত ‘আয়া রাম গয়া রাম’ প্রবচনের মূলে রয়েছেন হরিয়ানা রাজ্য বিধানসভার বিধায়ক গয়া লাল। ১৯৬৭ সালে তিনি এক দিনের মধ্যে তিনবার দল বদল করায় ভেঙে যায় বিধানসভা, জারি হয় রাষ্ট্রপতির শাসন। বর্তমানে ‘দলবদল’ আইনপ্রণেতাদের ডাকা হয় এই নামে।

গয়া লাল নির্দলীয় সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। একদিন সকালে তিনি কংগ্রেস ত্যাগ করে যুক্তফ্রন্টে যোগ দেন, ওই দিনই দুপুরের দিকে আবার কংগ্রেসে ফিরে যান। কংগ্রেস নেতা রাও বিরেন্দর সিং তখন চন্ডিগড় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁকে পাশে নিয়ে ঘোষণা দেন– ‘আয়া রাম গয়া রাম’। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনের ৯ ঘণ্টার মধ্যেই গয়া লাল ফের যুক্তফ্রন্টে ফিরে যান।

হরিয়ানার বিধায়ক গয়া লালকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের উক্তিটি ক্রমেই ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে প্রবচনে পরিণত হয়। ১৯৬৭ সালে ভারতে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নির্বাচিত কমবেশি ৩৫শ বিধায়কের মধ্যে ৫৫০ জনই বিভিন্ন সময়ে দল বদল করেন। কেউ কেউ একাধিকবারও দল বদল করেন। পরেও এই ধারা অব্যাহত থাকলে অতিষ্ঠ ভারতীয় লোকসভা ১৯৮৫ সালে সংবিধানের ৫২তম সংশোধনীর মাধ্যমে প্রণয়ন করে ‘আইনপ্রণেতাদের দলত্যাগ বিরোধী আইন’। আইনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, রাজ্যসভা, লোকসভা বা বিধানসভার স্পিকার যদি মনে করেন কোনো সদস্য মনোয়নদাতা দলটি ত্যাগ করেছেন, তবে তাঁর সদস্যপদ বাতিল হবে। তবে দলের এক-তৃতীয়াংশ সদস্য একযোগে দলত্যাগ করে নতুন দল বা উপদল গঠন করে বা ভিন্ন কোনো দলে যোগ দিয়ে সদস্যপদ বহাল রাখতে পারবেন।
আমাদের সংবিধান প্রণয়নকালে, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের গণপরিষদের প্রায় সব সদস্যই ছিলেন ১৯৫৪-৫৮ সালের পূর্ব বাংলা সরকারের অভিজ্ঞতায় পুষ্ট। আবু হোসেন সরকার আর আতাউর রহমান খান পালাক্রমে পূর্ব বাংলার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন একাধিকবার। আবু হোসেন সরকারের একবারের প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদ ৭৫ ঘণ্টা আর আরেকবার ১২ ঘণ্টা। এই তিক্ত অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে ভবিষ্যতে যাতে আইনপ্রণেতারা খেয়ালখুশিমতো দল বা সরকারের পতন ঘটাতে না পারেন, তারই প্রতিষেধক হিসেবে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যুক্ত হয় অনুচ্ছেদ ৭০। নির্বাচিত সরকারের স্থায়িত্ব রক্ষা করাই ছিল এ অনুচ্ছেদ সংযুক্তির সপক্ষে প্রধানতম যুক্তি।

২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীমূলে ৭০ অনুচ্ছেদের শিরোনাম ‘রাজনৈতিক দল হইতে পদত্যাগ বা দলের বিপক্ষে ভোটদানের কারণে আসন শূন্য হওয়া’। এর অধীনে সর্বশেষ বর্ণনা–‘কোন নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরূপে মনোনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি- (ক) উক্ত দল হইতে পদত্যাগ করেন, অথবা  (খ) সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন, তাহা হইলে সংসদে তাঁহার আসন শূন্য হইবে, তবে তিনি সেই কারণে পরবর্তী কোন নির্বাচনে সংসদ-সদস্য হইবার অযোগ্য হইবেন না।’
অনুচ্ছেদটির শিরোনাম ও পাঠ ১৯৭২ সালের আদি সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদের হুবহু একই রূপ। ২০১১ সালের আগে ১৯৭৫ ও ১৯৯১ সালে অনুচ্ছেদটি দু’বার সংশোধন করা হয়। প্রথমবার সংশোধনী আনা হয় ১৯৭৫ সালের সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী তথা বাকশাল প্রণয়ন সংশোধনীর মাধ্যমে। সেই সংশোধনীতে শিরোনাম বদলে হয় ‘পদত্যাগ ইত্যাদি কারণে আসন শূন্য হওয়া’, আদি বর্ণনা একই রেখে ব্যাখ্যা যুক্ত করা হয়–‘যদি কোন সংসদ-সদস্য, যে দল তাঁহাকে নির্বাচনে প্রার্থীরূপে মনোনীত করিয়াছেন সেই দলের নির্দেশ অমান্য করিয়া- (ক) সংসদে উপস্থিত থাকিয়া ভোটদানে বিরত থাকেন, অথবা (খ) সংসদের কোন বৈঠকে অনুপস্থিত থাকেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।’

যেখানে মূল সংবিধানে কেবল পদত্যাগ বা দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলে সংসদ সদস্যপদ বাতিল হওয়ার বিধান ছিল, সেখানে ১৯৭৫ সালের সংশোধনীতে সংসদের বৈঠকে উপস্থিত থেকে ভোটদানে বিরত থাকলে বা বৈঠকে অনুপস্থিত থাকলেও কেল্লা ফতে হয়ে যেত। অনেকে বলে থাকেন, একদলীয় বাকশাল গঠনের ফলে যেহেতু দলের বাইরে ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল না, তাই কোনো সদস্য যাতে দলের বিরোধিতা করে ভোটদানে বিরত বা অনুপস্থিত থেকে প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিতে না পারেন, তা রোধ করার জন্যই এই ব্যাখ্যা যুক্ত করা হয়।

১৯৯১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী আইনে বিধানটি আরও বেশি কঠোর করা হয়েছিল। চতুর্থ সংশোধনীর পাঠ বহাল রেখে এই সংশোধনীতে অতিরিক্ত দুটি দফা যুক্ত করা হয়। দফা ২-এ সংসদীয় দলের ভাঙন রোধের ব্যবস্থা করা হয় এবং দফা ৩-এর বর্ণনায় কোনো ব্যক্তি নির্দলীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর কোনো রাজনৈতিক দলে যোগদান করলে ৭০ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য সাধনকল্পে ওই দলের মনোনীত প্রার্থীরূপে সংসদ সদস্যরূপে নির্বাচিত হয়েছেন বলে গণ্য করা হয়। এর ফলে নির্দলীয় সংসদ সদস্যদেরও দলীয় শৃঙ্খলার বেড়ি পরিয়ে দেওয়া হয়। চতুর্থ ও দ্বাদশ সংশোধনীর কঠিন বেড়ি শিথিল করে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অনুচ্ছেদটি আদি অবস্থায় ফিরে যায়।
৭০ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান অবস্থায় একজন সংসদ সদস্য সংসদে উপস্থিত থেকেও নিজ দলের পক্ষে বা বিরুদ্ধে ভোট না দিয়ে নিজ ইচ্ছায় পরিচালিত হয়ে ভোটদানে বিরত থাকতে পারেন অথবা ভোটের সময় অনুপস্থিতও থাকতে পারেন, এতে তাঁর সংসদ সদস্যপদ বাতিল হবে না। কেবল নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট প্রদান করলেই এই অনুচ্ছেদ অনুসারে সংসদ সদস্যপদ বাতিল হবে। লক্ষণীয় ভোট দেওয়ার আগে সদস্যপদ বাতিল হয় না, বাতিল হয় ভোট দেওয়ার পরে। যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন, তাহলে তো কিস্তি এমনিই পাল্টে যাবে, তখন ৭০ অনুচ্ছেদ কার্যকর করা কতটা বাস্তবসম্মত হবে তার পরীক্ষা কখনোই হয়নি।

তারপরও দেশে এখন অনুচ্ছেদ ৭০ বাতিলের জোরদার দাবি উঠছে। এ দাবির স্বপক্ষে সবল যুক্তি হচ্ছে–সংসদ সদস্যদের ব্যক্তিস্বাধীনতা, ভোট প্রদানের অবাধ স্বাধীনতা। বলা হচ্ছে, অনুচ্ছেদ ৭০ স্বৈরশাসক তৈরি করে। স্মর্তব্য যে, ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কোনো দলই জাতীয় সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেনি। ৩০০ আসনের সংসদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) আসন ছিল ১৪০টি। জামায়াতে ইসলামীর ১৮টি আসনের সমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করে। সরকারের স্থায়িত্ব বজায় রাখতে ও সংসদীয় ক্যু ঠেকাতে ৭০ অনুচ্ছেদকে আরও মজবুত করা হয়।
১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে বাকশাল গঠন প্রশ্নে তৎকালীন সংসদ সদস্য জেনারেল এমএজি ওসমানী ও ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়ে চার বছর বয়সী বাংলাদেশে যে নজির সৃষ্টি করেছিলেন, পরবর্তী ৪৯ বছরে আর কোনো সংসদ সদস্য সে পথে হাঁটেননি। বিএনপি থেকে সপ্তম সংসদে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. হাসিবুর রহমান স্বপন ও ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন টেস্ট কেস হিসেবে দলের বিপক্ষে কোনো ভোট না দিয়ে বা আনুষ্ঠানিকভাবে দল থেকে পদত্যাগ না করে ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিপরিষদে যোগ দেন। তারা দু’জন দল থেকে পদত্যাগ না করে বা দলের বিরুদ্ধে ভোট না দিয়ে সরকারি দলে যোগ দেওয়ায় সংসদ সদস্য পদ বহাল থাকতে পারে–এটা ছিল সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের একটি পরীক্ষা। তবে হাইকোর্টের রায়ে তারা দু’জন সংসদ সদস্যপদ হারান। সংসদ সদস্যপদ শূন্য হলে উভয়েই নিজ নিজ আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন পুনর্বিজয়ী হন। একই সংসদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্য আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম দল ও জাতীয় সংসদ থেকে ১৯৯৯ সালে পদত্যাগ করেন। পরবর্তী উপনির্বাচনে তিনি নতুন দল গঠন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। নবম সংসদে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য সোহেল তাজ ২০০৯ সালে মন্ত্রিপরিষদ থেকে এবং দীর্ঘদিন সংসদে অনুপস্থিত থেকে ২০১২ সালে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। যতদূর জানা যায়, এই ছয়জন ব্যতীত আর কেউই অনুচ্ছেদ ৭০-এর পরীক্ষা নেননি।

এখন জনপ্রিয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার। যারা দাবি তুলেছেন তারা যথেষ্ট প্রভাবশালী; অতএব ব্যবস্থাটি চালু হয়েও যেতে পারে। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থায় ভোটাররা কোনো ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন না। ভোটার ভোট দেবেন দলকে, কেবল প্রতীককে। ওই প্রতীকের মালিক দলটি প্রাপ্ত ভোটের হিস্যা অনুযায়ী জাতীয় সংসদে প্রতিনিধি পাঠাবে।
বিদ্যমান পদ্ধতিতে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের দায় থাকে ভোটারের কাছে, দায় থাকে দলের কাছে। কেউ ইচ্ছা করলে কোনো দলের প্রার্থী না হয়ে নির্দলীয় নির্বাচন করেও জাতীয় সংসদের সদস্য হতে পারেন। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনে নির্দলীয় সংসদ সদস্য হওয়ার কোনোই সম্ভাবনা থাকবে না। যারা সংসদ সদস্য হবেন, তারা নির্দিষ্ট কোনো এলাকার প্রতিনিধিত্ব করবেন না, তারা প্রতিনিধিত্ব করবেন একান্তভাবেই মনোনয়নদানকারী দলের। দল কি মেনে নেবে এসব প্রতিনিধির মুক্ত বিহঙ্গের মতো অন্য কোনো দলে বিচরণ? যদি তাই হয়, তাহলে দলের প্রাপ্যতা অনুযায়ী সংসদ সদস্যের হিস্যায় টানাটানি পড়বে। ফলে যদি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন হয়, তবে ৭০ অনুচ্ছেদের প্রয়োগ হবে আরও কঠোর।

যে পদ্ধতির নির্বাচনই হোক না কেন, বাংলাদেশ ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর লোকচরিত্র অনুসারে ৭০ অনুচ্ছেদের বিধান না থাকলে ‘আয়া রাম গয়া রাম’ খেলা অস্থির করে দিতে পারে ভবিষ্যৎ সংসদকে। সাম্প্রতিককালে পাকিস্তানে ইমরান খান সরকার পতনেও আমরা দেখেছি ‘আয়া রাম গয়া রাম’ খেলা।
আমরা বরং আশায় আশায় থাকব ভবিষ্যতে সংসদ সদস্যপদ বহাল রাখার জন্য নিশ্চুপ না থেকে জেনারেল এমএজি ওসমানী ও ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন, যারা দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার সৎ সাহস দেখাবেন। সংসদীয় গণতন্ত্র শুরু হওয়ার পরে গত ৫১ বছরে এই দু’জন ব্যতিক্রমী ছাড়া ৩৬শ জন সংসদ সদস্যের আর কেউ যখন দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার সাহস দেখাননি, সেখানে বৃথা ৭০ অনুচ্ছেদকে দোষারোপ করে লাভ কী! এমনকি অনুচ্ছেদটির দফা ২ ও দফা ৩ বিলুপ্ত হওয়ার পরও কোনো সংসদ সদস্য সুযোগ গ্রহণ করেননি। তবে কেন ৭০ অনুচ্ছেদকে দোষারোপ করে ‘আয়া রাম গয়া রাম’দের তোল্লাই দেব?

৭০ অনুচ্ছেদকে তুলে দিতে অন্য একটি বিকল্প হতে পারে। কোনো দলভিত্তিক নির্বাচন নয়, ব্যক্তি জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হবেন নিজ যোগ্যতায়, দলীয় কোনো প্রতীকে নয়। নির্বাচনের পর তিনি যোগ দিতে পারবেন পছন্দের রাজনৈতিক দলে, মন চাইলে যোগ না-ও দিতে পারেন, থাকতে পারেন নির্দলীয়। নির্বাচনের আগেও ওয়াদা করতে পারবেন যে, নির্বাচিত হলে তিনি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগদান করবেন কিনা! সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্য যে রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন, সেই রাজনৈতিক দল বা একাধিক দল মিলে সরকার গঠন করবে। তখন প্রত্যেক সংসদ সদস্যই থাকবেন স্বাধীনভাবে নির্বাচিত। তিনি যেহেতু কোনো দলের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হবেন না, তাই দায়বদ্ধ থাকবেন না কোনো দলের কাছে, তাঁর বিবেকমতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন জাতীয় সংসদে উত্থাপিত প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে, থাকতে পারবেন ভোটদানে বিরতও। কেবল স্বাধীনভাবে নির্বাচিত হয়ে আসা একজন ব্যক্তিই অধিকার সংরক্ষণ করতে পারেন স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের। নইলে দলীয় পরিচয়ে নির্বাচিত ব্যক্তিকে দলের কাছে দায়বদ্ধ রাখতেই হবে, তা সে সংখ্যানুপাতিক বা আসনভিত্তিক যেমনতর নির্বাচনই হোক না কেন।

আ ক ম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী: অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব

সর্বশেষ খবর

ভিডিও সংবাদ

Play Video