পরাজয়ের আবহমান গল্প
শেষমেশ যেন পরাজিত হতেই এখানটায় আসা।
এবং তখনি উপমার ভুল প্রয়োগ ঘটাই।
শরীরের ব্যাকরণ তখন যেন বাংলা সহপাঠ।
সে কী তীব্র, আকাঙ্খিত অথচ গিদ্বিজয়ী চুম্বকধর্ম!!
যেন সন্ধি নয়, শুধুই বিচ্ছে¡দের আগপাঁচতলা
ভাবের সম্প্রসারণ নয়, স্বর-ব্যঞ্জণ সংকোচন!
বরং নিরঙ্কুশ পরাজয়।
এবং পরাজিত হই।
জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার আশঙ্কায় থাকি, চিরটাকাল।।
****
চিঠি
ছিড়ে গেছে সুতো
উড়ে গেছে ঘুড়ি
রয়ে গেছে তাই, বিরহী একলা নাটাই।
কতো শতো কথা
বুকে জমা ব্যাথা
মেঘেদের দেশে তবে কী করে পাঠাই।
****
দ্বিপাক্ষিক
কই গেলি আজ-
জোনাকীর দল
নবমীর চাঁদ, জোছনা গৃহত্যাগী।
আয় তবে আয়
রাত যে ফুরায়
চল, অনুভূতিটাকে করি ভাগাভাগি।
****
অচল পদ্যের গান
শেষ রাত্রে ভেঙ্গে যাওয়া ঘুমকে আমি শুভবিদায় জানাই।
তারপর একটি নতুন ভোরের জন্য অপেক্ষা করি।
নতুন ভোর নিয়ে আসবে নতুন সকাল
নতুন দিন, নতুন স্বপ্ন, নতুন সম্ভাবনা।
আমি খোলা মুখে ম্যারাথন হাই তুলি, চোখ কচলে পাশ ফিরে শুই
এবং আমি জেগে থেকে থেকে অন্ধকারে হাতড়াই।
স্মৃতি-বিস্মৃতির অতল কূপে খুঁজে পাই কিছু পুরাতন ভুল তাল, লয়, সুর।
কিছু ঠুনকো মান অভিমান, কিছু বিরহ মাখা গান।
সেসব পড়ে থাক, আমি উঠে যাই।
বেলা উঠে, আমি ঘর ছাড়ি, বাইরে পা বাড়াই, বুক ভরে নি:শ্বাস নিই।
গাছের পাতারা ভোরের বাতাসে নড়েচড়ে উঠে।
আমি নতমস্তকে নি:শ্বাসের ঋণ স্বীকার করি।
সদ্য ঝুঁট উঠা মোরগ গা ঝাড়া দিয়ে গলা ছেড়ে তার সাম্রাজ্যের ঘোষণা দেয়
নেড়িকুকুরের দল খাবারের খোঁজে হন্যে হয়ে উঠে,
খোপার ভেজা গামছা খুলে চুল ছেড়ে বারান্দায় দাড়ায় সলাজ প্রতিবেশি।
দু একটা মটর সাইকেল এ পথে পেট্রোল পোড়ায়,
ঢুলুঢুলু চোখে ছুটে যায় ট্রাকচালক- সমগ্র বাংলাদেশ পাঁচ টন।
বাসাবাড়ির রন্ধন সহকারিরা সেন্ডেলের সোল ক্ষয় করে শশব্যস্ত।
দেশি মুরগির ঝাঁকা মাথায় নিয়ে হাঁক ছাড়ে ভ্রাম্যমাণ দোকানী। তরকারিওয়ালা।
রোদ ওঠে।
চায়ের দোকানের কেটলিতে বসে গরম পানি।
গলির ব্যস্ততা বাড়ে।
জেগে উঠে মফস্বল, শহর বন্দর, গ্রাম।
জন্ম নেয় নতুন গল্প।
গদ্য-পদ্য।
এবং শেষতক সদ্য ভূমিষ্ঠ কিছু অচল পদ্য আমাকে পুন:পুন: নতুন ভোরের জন্য বাঁচিয়ে
রাখে।
****
মিলন
ভরা নদী
ঢেউ তোলে, ঢেকে বলে আয়
ভয় পাই
ডুবি যদি, নিরবধি-জলের মায়ায়।
ডাকে জল, তবে চল
ভাসি একসাথে
মিলে মিশে একাকার
হই মোহনাতে।