ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্যের মধ্যদিয়ে শেশ হলো শেরপুরের বারোমারী সাধু লিওর খ্রীস্টান ধর্মপল্লীতে দু’দিনব্যাপী ফাতেমা রাণীর তীর্থোৎসব। এবার প্রায় অর্ধলক্ষাধিক তীর্থ যাত্রী দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ এই তীর্থে অংশগ্রহণ করেন। মা মারিয়ার সাহায্য ও প্রার্থনার পাশাপাশি নানা সমস্যার সমাধানের জন্য মানত পূর্ণ করতে বৃহস্পতিবার থেকেই এই আয়োজনে অংশ নেন ক্যাথলিক খ্রীস্ট ভক্তরা। এদিকে তীর্থযাত্রা সফলভাবে সম্পন্ন করতে কড়া নিরাপত্তা ও সার্বিক সহযোগিতা করেছে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন।
আয়োজকদের তথ্যমতে, ১৯৪২ সালে প্রায় ৪২ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত বারোমারী সাধু লিওর এ ধর্মপল্লীটি ১৯৯৮ সালে পর্তুগালের ফাতেমা নগরীর আদলে নির্মাণ হওয়ার পর থেকেই এটিকে বার্ষিক তীর্থ স্থান হিসেবে নেয়া হয়েছে। প্রতি বছরের অক্টোবরের শেষ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এই তীর্থ যাত্রায় অংশ নেন দেশ বিদেশের পুণ্যার্থীরা। এ বছর ‘প্রার্থনা অনুপ্রেরণায় ফাতেমা রাণী মা মারিয়া’ এই মূলসুরে শেরপুরের নালিতাবাড়ীর সীমান্তবর্তী বারোমারী খ্রীষ্টান মিশনে দু’দিনব্যাপী বার্ষিক তীর্থোৎসব শেষ হয়েছে।
ভারত সীমান্তঘেঁষা বারমারী সাধু লিওর ধর্মপল্লীতে বৃহস্পতিবার পাপ স্বীকার, পবিত্র খ্রীষ্টযোগ, আরাধ্য সংক্রান্তের আরাধনা, নিশি জাগরণ ও আলোর মিছিলে অংশ নেন ক্যাথলিক খ্রিষ্টান পূণ্যার্থীরা। নিজেদের মনবাসনা পূরণ ও পূণ্য লাভের আশায় পাহাড়ি পথে আলোর মিছিল শেষে মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করেন খ্রীষ্ট ভক্তরা।
নালিতাবাড়ী বারোমারী ধর্মপল্লীর ফাদার তরুণ বনোয়ারী বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে পাপ স্বীকারের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় প্রথম দিনের উৎসব। পরে পবিত্র খ্রীস্টযাগ, আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রান্তের আরাধনা, নিশি জাগরণ ও নিরাময় অনুষ্ঠান হয়। পরেরদিন শুক্রবার সকালে জীবন্ত ক্রুশের পথ ও মহা খ্রীস্টযাগের মাধ্যমে তীর্থোৎসবের সমাপ্তি ঘটে।
ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের সহকারী বিশপ সুব্রত বনিফাস গমেজ বলেন, তারা দুই কিলোমিটার পাহাড়ি ক্রুশের পথ অতিক্রম শেষে ৪৮ ফুট উঁচু মা-মারিয়ার কাছে নিজেদের নানা সমস্যার সমাধানের জন্য পূরণ করেছেন মানত। তীর্থ উৎসবের মাধ্যমে এবার বিশ্ব মানবতার কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়েছে।
শেরপুরের পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ হয় তীর্থ উৎসব।