রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেছেন, জরুরি ভিত্তিতে দ্রব্যমূল্য মোকাবিলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিসহ সকল রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে কাজ করার লিখিত প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম, কিন্তু তার প্রতিফলন দেখছি না। এ কারণে চব্বিশের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নও হচ্ছে না। আমরা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে জনগণকে নিয়ে বর্তমান সরকারকে চাপ অব্যাহত রাখব।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে সংগঠনটির রংপুর জেলা শাখার আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
হাসনাত কাইয়ুম বলেন, আমরা মনে করি নির্বাচন, সংসদ বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভাগ, স্থানীয় সরকার, অর্থনৈতিক আইনকানুন, জনগণের মৌলিক অধিকার, সংবিধানের ক্ষমতা কাঠামো সংস্কার করার উদ্যোগ নিলে বাকি সংস্কারগুলো সহজ হবে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে তাদের কাছে লিখিত পরামর্শ দিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম, জরুরি ভিত্তিতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এনে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের সংস্কার করা, আমরা তাদেরকে সেই কথাটি বলেছিলাম। বিশেষজ্ঞ কমিটি বানানোর কথা বলেছিলাম। কয়েকটা কমিটি তারা বানিয়েছেন। আমরা ১২টা টাস্কফোর্স করার কথা বলেছিলাম। সকল রাজনৈতিক দল এবং দলের বাইরে যত সংগঠন আছে সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে, মতামত নিয়ে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা প্রকাশ করার কথা বলেছিলাম এবং এই অংশটুকু বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও এর কোনো প্রতিফলন দেখছি না।
হাসনাত কাইয়ুম বলেন, আমরা আমাদের দাবি বাস্তবায়নে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে চাপ দিতে চাই। সেই জন্য সারা দেশে আমাদের ভাবনা নিয়ে আলোচনা করছি। সকল দলের, সকল সংগঠনের সঙ্গে কথা বলছি। যেন এই সরকার পথ ভুলে না যায়। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই, কারণ বাংলাদেশের মানুষের রক্ত দেওয়া কষ্ট যেন বিফলে না যায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই সরকারকে একদিকে সহযোগিতা করতে চাই। অন্যদিকে জনতার যে আকাঙ্ক্ষা তা বাস্তবায়নে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের ওপর অব্যাহত চাপ রাখতে চাই। এই উদ্যোগে আমরা রংপুর, চট্টগ্রাম রাজশাহীতে সামবেশ করেছি। এভাবে সারা দেশে আমরা সমাবেশ করব। জনগণকে সংগঠিত করব এবং সরকারকে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের কাজ শুরুর জন্য চাপ দিতে থাকব।
হাসনাত কাইয়ুম বলেন, আমরা যখন সংস্কারের কথা বলতাম, তখন কেউ একথা বলে নাই। আজকে সারা বাংলাদেশ সংস্কারের কথা বলতে শুরু করেছে। সবাই সংস্কারের সঙ্গে একমত। আমরা সাত দফার কথা বলছি। অনেকেই সাত দফাকে ভেঙে কেউ ৪০ দফা, কেউ ১০ দফা করেছে। আমরা মনে করি, আমাদের সাত দফার সঙ্গে জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে আসবে। আমরা যেমন লিখিত দিয়েছি। অন্যরা লিখিত দিলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
সমাবেশে জেলা সভাপতি অধ্যাপক চিনু কবিরের সভাপতিত্বে এবং ন্যায়পাল অ্যাডভোকেট রায়হান কবীরের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, লেখক নাহিদ হাসান নলেজ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান খান, জাতীয় কমিটির সদস্য ফরিদুল ইসলাম, ছামিউল আলম রাসু, কনক রহমান, রাষ্ট্র সংস্কার যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রধান সমন্বয়ক মাশকুর রাতুল, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রধান সমন্বয়ক আহমেদ ইসহাকসহ জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।