আবহাওয়া বদলে গেছে, বদলে গেছে ঋতু। আর ঋতু পরিবর্তনের সময় কম-বেশি সবারই জ্বর এসে থাকে। এ সময় সাধারণত কিছু ভাইরাস সক্রিয় হয়ে উঠে। ভাইরাসের আক্রমণেই জ্বর আসে। একইসঙ্গে সর্দি-কাশির মতো সমস্যা তো রয়েছেই।
এ ধরনের সমস্যায় বেশি বেশি পানি পান করতে বলা হয়। কিন্তু অনেকেই আবার বলে থাকেন, জ্বর এলে পানি পান করা ঠিক নয়। এতে নাকি উপকারের থেকে বরং ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু আসলেই কি তাই? সম্প্রতি এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট মেডিসিন চিকিৎসক রুদ্রজিৎ পাল। এবার তাহলে এ চিকিৎসকের ভাষ্যমতে বিষয়টি জেনে নেয়া যাক।
বেশি বেশি পানি পানের কারণ: জ্বর হলে শরীর খুবই গরম থাকে। পাশাপাশি বমি, পায়খানা ও অত্যধিক ঘাম হওয়ায় শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায়। এ অস্থায় পানির ঘাটতি বা ডিহাইড্রেশনের আশঙ্কা থাকে। যা থেকে ক্লান্তিবোধ ও প্রস্রাব কমে যাওয়া এবং ব্লাড প্রেশার ফল হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ জন্য জ্বর এলে পানি পানের পরিমাণ বাড়াতে বলা হয়।
কী পরিমাণ পানি পান করবেন: নির্দিষ্ট কোনো পরিমাণের কথা বলা হয় না। কারণ, কোনো ব্যক্তির ওজন, উচ্চতা ও কাজের ধরন এবং অসুখ সম্পর্কে জানতে হয়। তারপরই ওই ব্যক্তির পানি খাওয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়। তবে সহজ হিসেবে হচ্ছে, সাধারণ সময়ের থেকে জ্বর হলে তখন ৫০ শতাংশ পানি বেশি পান করতে হবে। অর্থাৎ, আপনি যদি দিনে ৩ লিটার পানি পান করেন, তাহলে জ্বর এলে ৪.৫ লিটার পরিমাণ পানি পান করবেন। এতেই সুস্থ হবেন।
পানি ছাড়া অন্যান্য উপাদান: শুধু পানির ওপরই ভরসা করলে চলবে না। ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষায় ওআরএস ওয়াটার পান করতে হবে। প্যাকেটের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিমাণমত পানিতে ১টা ওআরএস’র প্যাকেট ভালো করে মিশিয়ে পান করুন। এতে ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্য বজায় থাকবে। তবে হাতের কাছে ওআরএস না থাকলে ঘরোয়াভাবে বানিয়েও খেতে পাররেন। তাতেও উপকার পাবেন।
খাবারে নজর দেয়া: ভাইরাল ফিভারে প্রায় সবাই মুখের স্বাদ হারিয়ে ফেলেন। এ কারণে কিছুই খেতে মন চায় না। আর এই সমস্যা যেভাবেই হোক কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করতে হবে। তা না হলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতির সম্ভাবনা থাকবে। এ জন্য জ্বর এলেও শাক-সবজি ও ফলমূলের মতো উপকারী খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি ডিম, মাছ ও সোয়াবিন খেতে পারেন। এতে ভিটামিন, খনিজ ও প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হবে।
কখন সাবধান হতে হবে: জ্বর যদি ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে এবং এ অবস্থায় ওষুধ সেবনের পরও তাপমাত্রা না কমলে, শরীর খারাপ লাগতে থাকলে, শ্বাসকষ্টের সমস্যা হলে, বারবার পায়খানা বা বমি হতে থাকলে কালক্ষেপণ না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করলেই সুস্থ হয়ে যাবেন।