সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় জাতীয় শোক, শিশুসহ আটটি দিবস বাতিল করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এমন সিদ্ধান্তকে জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ের ইতিহাস ও চেতনা মুছে ফেলার চেষ্টা আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বুধবার (১৬ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা ওই বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
এতে অভিযোগ করা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকেই মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও চেতনাবিরোধী কাজ করে আসছে। সুপরিকল্পিতভাবে মানবিক মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনষ্টে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদেরকে শত্রুজ্ঞান করছে।
আওয়ামী লীগ আরও অভিযোগ করে, জাতীয় রাজনীতি থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে নির্মূল করতে রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করছে, মিথ্যা মামলায় গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশে নৈরাজ্যবাদ কায়েম করেছে, যাকে ‘মাৎস্যন্যায়’ বলা চলে। সরকারের অদক্ষতা ও অনাচারে অতিষ্ঠ মানুষ ইতোমধ্যে বলতে শুরু করেছে, ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম আমরা’।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলা ও বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যার নেতৃত্ব দিয়েছেন ইতিহাসের সন্তান জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির পিতার বিশ্বস্ত সহকর্মীবৃন্দ, দেশের মুক্তিকামী জনতা ও তার পরিবারের অবদান অমোছনীয়। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণের শিকার হচ্ছে মুক্তির লড়াইয়ের সকল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও প্রতীকী স্থাপনাসমূহ। এসবের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্কিত জাতীয় দিবসসমূহ রাষ্ট্রাচার থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আমরা এই প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
আওয়ামী লীগ জানায়, আমাদের প্রত্যাশা হিংসা ও বিদ্বেষের বিপরীতে সকলের যাবতীয় ও জাতীয় ভুলগুলো অন্ধকারে হারিয়ে যাক, আমাদের অন্যায়গুলো বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াক এবং সকল অপশক্তি বিনাশের জন্য আমাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হোক ‘সত্য বল সুপথে চল’। সরকারের বিদ্বেষে বাতিল হতে যাওয়া দিবসগুলো বাঙালি বরাবরের মতো সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে পরম মমতায় পালন করে দৃঢ়ভাবে বলে উঠবে, ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে’।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘রিসেট বাটন’ চেপে বাঙালির জাতীয় ইতিহাস মুছে ফেলার মাধ্যমে বিভেদ ও প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তির রাজনীতিকে পরিপুষ্ট করতে চাওয়ার এই অভিপ্রায় বাঙালি জাতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সমগ্র জাতি ও মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এই হীন পদক্ষেপের উপযুক্ত জবাব দেবে, ইনশাআল্লাহ্।